১ লা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।
জন্মদিনে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি প্রথম বাঙালি সিভিলিয়ান ও সাহিত্যিক সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে।
তিনি ছিলেন একজন সুলেখক, সংগীতস্রষ্টা ও ভাষাবিদ।আমরা নারীরা তাঁর কাছে ঋণী কেননা তিনি ছিলেন নারী স্বাধীনতার অগ্রনায়ক। তাঁর স্ত্রী জ্ঞানদানন্দিনী দেবীকে তিনি যে স্বাধীনতার স্বাদ দিয়েছিলেন বোধ করি আর কোনও স্ত্রী পৃথিবীতে সে স্বাদ পায়নি।
সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১ জুন, ১৮৪২ - ৯ জানুয়ারি, ১৯২৩) ছিলেন বাঙালি লেখক, সংগীতস্রষ্টা ও ভাষাবিদ। তিনি ছিলেন ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসেযোগদানকারী প্রথম ভারতীয়। ব্রিটিশ ভারতের নারীমুক্তি আন্দোলনে সত্যেন্দ্রনাথ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। পারিবারিক পরিচয়ে তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অগ্রজ।তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসম্ভব প্রিয় মেজদা।
সত্যেন্দ্রনাথ নিজগৃহে ইংরেজি ও সংস্কৃত ভাষা শেখেন। ১৮৫৭ সালে তিনি হিন্দু স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করে প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যয়ন করেন। ১৮৫৯ সালে তিনি জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন এবং সুরেন্দ্রনাথ ও ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী নামে দুই কৃতী সন্তানের জনক হন।
কলেজ জীবনেই সত্যেন্দ্রনাথ ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং ১৮৬১ সালে কেশবচন্দ্রের সঙ্গে কৃষ্ণনগরে ব্রাহ্মধর্ম প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৮৬২ সালে তিনি সস্ত্রীক লন্ডন যান এবং ১৮৬৪ সালে আইসিএস হয়ে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৮৬৫ সালে আহমেদাবাদের অ্যাসিস্ট্যান্ট কালেক্টর ও ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে তিনি কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। তাঁর পেশাগত জীবনের অধিকাংশ সময় কাটে পশ্চিম ভারতে (সাবেক বোম্বাই প্রদেশে) এবং শেষ পর্যায়ে সাতারা জেলার সেসন জজের পদ থেকে অবসর নিয়ে তিনি কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন।
দেশবাসীর মধ্যে দেশাত্মবোধ ও স্বদেশানুরাগ উদ্দীপ্ত করার লক্ষ্যে সত্যেন্দ্রনাথ ১৮৬৭ সালের ১২ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তির দিন কলকাতার বেলগাছিয়ায় হিন্দু মেলার প্রবর্তন করেন। হিন্দুমেলার দ্বিতীয় অধিবেশনে জাতীয় ভাবধারায় সত্যেন্দ্রনাথ রচিত দেশাত্মবোধক গান ‘মিলে সবে ভারতসন্তান’ বহুল প্রশংসিত হয়। ১৮৯৭ সালে তিনি নাটোরে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনের দশম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। ১৯০০ ও ১৯০১ সালে তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদএর সভাপতি নিযুক্ত হন। ১৯০৬ সালে আদি ব্রাহ্মসমাজের আচার্য ও ১৯০৭ সালে জেষ্ঠ্য ভ্রাতা দ্বিজেন্দ্রনাথের সঙ্গে আচার্য ও সভাপতি নির্বাচিত হন।
সত্যেন্দ্রনাথ দেশের সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি স্ত্রীস্বাধীনতায় বিশ্বাস করতেন। এই চেতনা থেকে তিনি তাঁর পত্নী জ্ঞানদানন্দিনীকে বিলেতে নিয়ে পাশ্চাত্য মহিলাদের আদর্শে গড়ে তোলেন। তাঁর সহযোগিতায় জ্ঞানদানন্দিনী গৃহে পর্দাপ্রথা ভাঙতে সক্ষম হন এবং ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে সর্বপ্রথম বড়লাটের আমন্ত্রণে গভর্নমেন্ট হাউসে উপস্থিত হন।
সত্যেন্দ্রনাথ নয়টি বাংলা ও তিনটি ইংরেজি গ্রন্থ রচনা করেন। সে সবের মধ্যে সুশীলা ও বীরসিংহ নাটক (১৮৬৭), বোম্বাই চিত্র (১৮৮৮), নবরত্নমালা, স্ত্রীস্বাধীনতা, বৌদ্ধধর্ম (১৯০১), আমার বাল্যকথা ও বোম্বাই
#সুর_ও_বাণী